ফটোগ্রাফি আমার শখ এর পাশাপাশি মানসিক প্রশান্তির একটি মাধ্যম। নভেম্বর, ২০১৫ সাল থেকে মূলত আমার ফটোগ্রাফির পথচলা শুরু হয়। শুরুটা ৫ মেগাপিক্সেল এর ব্যাক ক্যামেরা দিয়ে হয়েছিলো। ডিভাইসকে কখনো বাধা ভাবি নি বলেই হয়তো এখন টুকটাক ফটোগ্রাফি জানি। ধীরে ধীরে ডিভাইস আপগ্রেড হয়ে ডি এস এল আর এ কাজ শুরু হলো। আমি বিশ্বাস করি ফটোগ্রাফি জানতে কখনোই টপ নচ ডিভাইস প্রয়োজন হয় না কেননা আমিও সেই ৫ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা দিয়েই শেখা শুরু করেছিলাম। মোবাইল ফটোগ্রাফি জানতে বেসিক যে ব্যাপার গুলো জানা দরকার তা নিয়েই নিচে কিছু আলোচনা তুলে ধরছি। যেহেতু আমি একজন Android User তাই এখানে Android ডিভাইস কেন্দ্র করেই লিখছি। আজকের আলোচনায় ‘PHOTOS’ মোডের বেসিক নিয়ে আলোচনা করবো।
-
- PHOTOS : মোবাইল ফটোগ্রাফির সবচেয়ে সহজ এবং প্রথম ফিচার হলো এটি। ফোনের ক্যামেরা অপশন অন করার পর প্রথমে আসে এই মোড টি। এতে ডিভাইস ভিত্তিক অটো ফোকাস নিয়ে ছবি তোলা যায়। তবে ফটোগ্রাফার চাইলে সাবজেক্টে ক্লিক করে ফোকাস ফিক্সড করতে পারে। ফোকাস সেট করার পর ফোকাস বক্সের পাশে ছবির ব্রাইটনেস বাড়ানো কমানোর জন্য একটি লাইন আসবে। সেই লাইনের উপরের দিকে টান দিলে ব্রাইটনেস বাড়বে আর নিচের দিকে টান দিলে ব্রাইটনেস কমবে। এবারে যদি স্ক্রিনের উপরে যাই তবে দেখা যাবে HDR , AI, flash light icon লেখা। অপশন অনুযায়ী ক্লিক করলে তা অন হবে আবার ক্লিক করলে অফ হবে। Effects এ গেলে সেখানে বিভিন্ন ইফেক্ট থাকবে ছবি অনুযায়ী তা বেছে নিয়ে ছবি তোলা যাবে। তবে ছবিতে এই অটো ইফেক্ট না নেওয়াই শ্রেয় কেননা পরবর্তীতে ছবি এডিটের সময় এডিটর তার পছন্দসই কালার টোণ দিতে পারে না। এছাড়াও সেটিংস এ দেখতে পাবেন ‘Water mark’ অপশন। এটি অন করলে আপনার ছবি তোলার সময় তাতে অটো ডিভাইসের নাম, সময় এবং আপনার কাস্টোমাইজ করা সিগনেচার বসাতে পারবেন। দৈনিক ব্যবহারের জন্য এটি অন রাখলেও ফটোগ্রাফির জন্য এটি অফ রাখা উত্তম কেননা এটি আপনার ছবির নিচের অংশে এক ধরনের টেক্সট বসিয়ে দেয় যার ফলে আপনি চাইলেও বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় ছবিটি ব্যবহার করতে পারবেন না কারণ সাধারণত এটি নিয়মের বাইরে থাকে। ‘Live Tips’ চালু রাখলে সেটি আপনার ক্যামেরায় ময়লা থাকলে বা ছবির Orientation এ সমস্যা থাকলে তা ডিটেক্ট করে অটো সাজেশন দিবে। ‘Smart Suggestion’ নামে কোনো অপশন যদি পান তবে সেটির মাধ্যমে আপনি বিভিন্ন ডকুমেন্টস এর ছবি তোলার সময় অটো ‘Doc’ সাজেশন পাবেন যার মাধ্যমে আপনি আপনার কাগজের ছবিগুলো স্ক্যান কপির মতো করে সেভ করতে পারবেন। আবার QR code স্ক্যান করতেও এই অপশন সহায়তা করবে। মাঝে মাঝে গ্রুপ ছবি তুলতে যেয়ে ছবির এংগেল এর কারণে কিছু সাবজেক্ট বিকৃত বা Distorted হয়ে যায়। তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঠিক করার জন্য একটি অপশন থাকে ‘Correct face distraction on group photos’ তা চালু করে নিতে পারেন। Picture Quality কেমন চান তার ভিত্তিতে High, Standard, Low তে রাখতে পারবেন। তবে ফটোগ্রাফি যারা করেন তাদের জন্য High Quality তেই ছবি তোলার পরামর্শ থাকলো। ফোনের ভলিউম বাটনটি শর্টকাট হিসেবে আপনাকে কেমন সাপোর্ট দিতে পারবে তাও আপনি নির্ধারন করতে পারবেন ‘Volume buttons function’ অপশনে। ‘Tap to take a photo’ চালু করলে আপনি ক্যামেরা চালু করে স্ক্রিনের যেকোনো স্থানে ক্লিক করলে ছবি তোলা যাবে। ‘Save Location’ চালু রাখলে ছবির ডিটেইলস এ গেলে GPS Track করা লোকেশন দেখা যাবে ছবিটির।
- NIGHT MODE : Night Mode এ মূলত রাতের সময় অর্থাৎ Low light এ ছবি তোলা হয়। এতে ছবিটি সাবজেক্ট ভেদে ৫-১৫ সেকেন্ডের মতো সময় নেয়। শাটার শট নেওয়া পর্যন্ত প্রথম ৫ সেকেন্ড সময় নেয় আর বাকি সময় ছবি প্রসেসিং এর জন্য নেয়। যতক্ষণ না শাটার শট নেওয়া শেষ করবে ততোক্ষণ পর্যন্ত মোবাইল Stable রাখতে হবে নয়তো ছবি ব্লার আসবে। এই মোডে ছবি তোলার ক্ষেত্রে অবশ্যই Stability এর দিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে।
- PANORAMA: Panoroma মোডে আপনি আপনার সামনের বিস্তৃত অংশের ছবি তুলতে পারেন। এটি চালু করার পর নিজে না সরে ক্যামেরা সরাবেন। এতে ছবির ফ্রেম উপর, নিচ, ডান ও বাম সব স্থান থেকেই সিলেক্ট করে তুলতে পারবেন।
- PORTRAIT: আমরা সাধারনত মানুষের ছবি তোলার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে থাকি Portrait মোডের। এই মোডে ছবি তোলার ক্ষেত্রে খেয়াল রাখতে হবে যে ছবির সাবজেক্ট যেন লাইটের বিপরীত এ থাকে । এতে থাকা Bookeh Mode এ চাইলেই ফোকাস এরিয়া কমানো বা বাড়ানো যাবে। অর্থাৎ ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার এর রেঞ্জ সেট করা যাবে।
সেটিংসে থাকা আরও কিছু অপশন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো পরের পার্টেই। আরো বিস্তারিত জানতে পরের পোস্টে চোখ রাখুন।
লেখক– সাদিয়া আহসান

